একোনাইট ন্যাপ – Aconite Nap

সংক্ষিপ্ত মূলপাঠ (Text)

চোখ রক্তবর্ণ, নিষ্প্রভ, চার ধারে নীল দাগ পড়ে। চোখ বিকৃত, উপর দিকে ঘুরে যায়। আলোর প্রতি অনীহা, বিশেষভাবে রোদ। আলো চোখকে ধাঁধিয়ে দেয়।

দৃষ্টিতে ঝিক মিক করলে সে উদ্বিগ্ন হয়, তার ভয় হয় যে, পাশের চলমান লোক তাকে ছুঁইবে।

চোখ থেকে অধিক পরিমাণে পানি পড়ে, প্রখর ব্যথা।

চোখে বেদনার গতি সামনের দিকে, চোখ মেললে মনে হয় চোখ যেন সামনের দিকে বেরিয়ে আসবে।

চোখে বেদনা যুক্ত প্রদাহ।

চোখ জ্বালা করে।

বাতাসে অত্যন্ত অনুভূতিশীলতা।

কাশির কালে চোখ থেকে পানি পড়ে।

দিন রাত চোখ থেকে পানি পড়ে।

অনুভব হয় চোখ যেন বড় হয়েছে, পাতা খুলে কোটর থেকে বেরিয়ে আসবে।

চোখে প্রচন্ড ব্যথা, লাল, প্রমেহ জনিত চোখের প্রদাহ।

চোখ সংকুচিত, তার পরে বিস্তৃত হয়।

চোখের পাতায় জ্বালা, চুলকানি এবং ভারত্ব।

উপরের পাতা শুকনো।

বাঁ চোখের ভিতরের কোণে (Canthus) বালি থাকার অনুভূতি, চোখের পাতা, গোলক লাল।

সুপ্রা অরবিটাল কানায় গুলি ছোঁড়া বেদনা, বেদনা বিভক্ত হয়ে কপাল থেকে মাথার উপরে

ডান শংখ স্থানে, চিবুক এবং গালে ছড়িয়ে পড়ে।

দৃষ্টি গোলযোগ পূর্ণ, মান, মাথা ঘোরা।

দৃষ্টি হীনতা।

আলোকভীতি।

সকল প্রকার দৃষ্টি ভ্রম।

ব্যাবহারিক সংকেত (Clinical Hints)

চোখের উপদ্রবঃ

চোখের নানা প্রকার টিস্যু এবং সংযুক্ত উপাদান গুলির তরুণ প্রদাহ সহ চোখ উপ গরম, শুকনো তীব্র বেদনার প্রথম অবস্থায় রস প্রসেকের পূর্বে একোনাইট ব্যবস্থেয় (In the first stage of acute inflammations of the various tissues of the eye and its appendages with heat dryness and sharp pain, before any exudation has taken place)। এইরূপ প্রদাহে চোখে প্রচন্ড অনুভূতিশীলতা জন্মে, চোখ ছোঁয়া যায় না, অতিশয় জ্বালা করে এবং উহা দ্রুত ফুলে ওঠে। চোখ মেলতেই শুধুমাত্র গরম পানির ফোঁটা পড়ে, চোখ খচ খচ করে, যেন বাইরের কোন বস্তু চোখে চো পড়েছে। ঠান্ডা লেগে, বিশেষতঃ শুকনো ঠান্ডা বাতাসে, কোন প্রকার বাইরের বস্তু ধুলি, বালি বাঁ। বা কোন প্রকার কুটা চোখে পড়ে প্রদাহ উপস্থিত হলে একোনাইট শুধু পীড়ার উগ্রতা বাঁ কমায়নি, দ্রুত আরোগ্য ও করেছে। কদাচিৎ একোনাইটের পর সালফার ব্যবহার করতে বাঁ। হয়েছে। এইভাবে সংযোজক ত্বকের (Conjunctiva) প্রদাহে ত্বক ফুলে ওঠা ও প্রচন্ড চো ব্যথা এবং বাতজনিত চোখের প্রদাহে স্বচ্ছ ত্বকের (Sclera) প্রদাহে খোঁচা মারা বা ছিঁড়ে ফেলার মত ব্যথা, আলোকভীতি, কর্নিয়ার (Cornea-অচ্ছদ পটল) চার পাশে নীল চক্র এবং চোখের গোলকের (Eye ball) টাটানি থাকলে একোনাইট খুব উপকার করে। রোগী মনে করে তার চোখ যেন বড় হয়েছে। আরও, চোখের পাতা (Eye lids) শক্ত, লাল, ফুলে ওঠে, অতিশয় অনুভূতিশীলতা বর্তমান থাকে, উপসর্গগুলি শুকনো উত্তাপে ঠান্ডা পানিতে উপশম হয়, বৃদ্ধি পায় সকালে। পাতায় অতিশয় জ্বালা।

লক্ষ্য করুনঃ

চোখের অতি পরিশ্রম জনিত তরুণ লক্ষণ, চোখের স্নায়ুশূল, সিলিয়ারী (Ciliary) ও চোখের কোটরের (Orbit) স্নায়ুশূল, ঠান্ডা লেগে চোখের তরুণ প্রদাহ এবং পুরাতন পীড়ার নতুন বৃদ্ধিতে একোনাইট প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। ঠান্ডা লেগে, শুকনো ঠান্ডা বাতাসে চোখের পীড়ায় উদ্বেগ, অস্থিরতা এবং মানসিক যাতনা থাকলে একোনাইট অবশ্যই ব্যবস্থেয়। প্রদাহিত চোখ গভীর লাল হয়, জ্বালা করে, চেপে ধরার মত ব্যথা চোখ নড়ালেই

উপস্থিত হয়।

কে কি বলেনঃ

একোনাইট প্রয়োগের উপযোগী সকল প্রদাহে অতিশয় বেদনা, জ্বালা, উত্তাপ ও শুদ্ধতা বর্তমান থাকে। স্টীল, কয়লা, পাথরের ক্ষুদে কণার মত বাইরের বস্তু চোখে পড়লে তার উত্তেজক ক্রিয়ার ফলে সংযোজক ত্বক ফুলে উঠা সহ কর্ণিয়ার প্রদাহ হয়। যা কিনা চোখের গোলকের উপরে পাতার শুকনো ঘর্ষণের সৃষ্টি করে, তার সাথে বিদ্যমান থাকে চোখের আরক্ততা। চোখের পাতার লোমগুলি ভিতরের দিকে বেঁকে গিয়ে চোখের উত্তেজনা সৃষ্টি করে। সর্দিজ প্রদাহের রস প্রসেক (Exudation) হবার পূর্বে একোনাইট প্রযোজ্য। সংযোজক ত্বক ফুলে উঠে, সেই সঙ্গে চোখের এমন ব্যথা হয় যে, রোগী মরবার আকাংখা করে। চোখের পাতার দানাগুলি বৃদ্ধির আগে তরুণ অবস্থায় কর্ণিয়া আরক্তিম ও মাংসময় (pannus) হয়ে উঠা সহ অবাঞ্ছিত রক্ত সঞ্চয় হয়। চোখে গরম এবং শুষ্কতা, বিশেষভাবে অতিরিক্ত পরিশ্রম জনিত উত্তাপে বৃদ্ধি আসে কিংবা শুকনো ঠান্ডা বাতাসের ঝাপটা লেগে উপস্থিত হয়। ডা. এলেন এন্ড নর্টন।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *